Friday, November 20, 2015
আপাত নিরীহ এক আধুনিকা কিশোরী
বাজার থেকে ফিরছে, বাম হাতে সব্জির
থলে। ডান মুঠোয় আতংকগ্রস্থ এক মোরগের উপস্থাপনা ছবিটিকে নতুন ভাবে ভাবতে বাধ্য
করে। কিশোরীর মুখমন্ডল গাঢ় ছায়াতে আঁকা। লালসার রূপনির্মাণের স্বচেতন প্রয়াস।
মোচা, শসা, পাকা আম, লিচু , মুলো ইত্যাদি
বাঙালীর প্রিয় ফল ও সবজি দিয়ে স্থিরচিত্র (still life) নির্মাণ। রচনাশৈলী অনেকটাই বটতলার কাঠখোদাই থেকে অনুপ্রাণিত, বলা যেতে পারে নতুনভাবে নির্মাণ। নাকউঁচু সমালোচক অথবা
শিল্প-শিক্ষার্থীদের অপছন্দের বিষয় হলেও এই ছবি বাঙালী আধুনিক রূপকল্পের অন্যতম
উদাহরণ বলা যেতে পারে।
মিশ্রমাধ্যমে আঁকা ছবিটি
সৃষ্টিকাল ১৯৪৬ সাল। ট্রেনের একটি তৃতীয় শ্রেণীর কামরা, প্রতিচ্ছায়াবাদীদের মতো করে নির্মিত ছবিটি বেশ মজাদার।
কালিঘাট পটের সেই বহুচর্চিত
ছবিগুলি মনে আছে, যেগুলিতে
সামাজিক ভ্রষ্টাচারের টানাপোড়েনের নগ্নরূপ সরাসরি তুলে ধরা হয়েছিল। অ্যাক্রিলিকে আঁকা পরিতোষ সেনের এই ছবিটি তার
উপযুক্ত উত্তরসূরী। চিত্রকল্পে আমার পাই দুইজন প্রায় নগ্ন সাধু ব্যাঘ্রচর্মের উপর
বসে আছে,
পাশে ত্রিশূল। দেহে অত্যাধিক মেদের উপস্থিতি তাদের ভোগের
অভ্যাসকে চিহ্নিত করে। পিছনে অবস্থিত সাধকের হাতে ধরা কল্কে তাদের নেশাগ্রস্থ
জীবনের প্রতীক। সামনের সাধক যার এই জগতের মোহমায়া থেকে মুক্তি ঘটার কথা সে
মুঠোফোনে জৈবিক চাহিদায় ব্যস্ত ... উত্তর অভিব্যক্তিবাদী এই ছবি আমাদের অন্তঃসার
-শূন্য আধ্যাত্মিক চেতনার কথা ব্যক্ত করে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment